রুদ্রবার্তা২৪.নেট: বন্ধুর ব্যাটারী চালিত মিশুক গাড়ি ছিনিয়ে নিতে ডেকে নিয়ে হত্যা করে লাশ একটি মাছের খামারে ফেলে দিয়ে যায় বন্ধুরা। সেই মিশুক বিক্রি করতে এসে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পরে এক বন্ধু। পরে গণপিটুনি দিয়ে ঘাতক বন্ধু রিফাতকে (২৬) পুলিশে সোপর্দ করে উত্তেজিত জনতা। ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায়। পরে আটককৃত রিফাতের স্বীকারোক্তি মেতাবেক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অভিযোগে আরেক বন্ধু জিহাদকে (২০) আটক করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) রাতে মিশুক চালক রবিনকে (২৫) হত্যা করে বক্তাবলীর চর রাজাপুরস্থ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলীর খামারে লাশটি ফেলে চলে যায় রিফাত। বুধবার (১৪ জুলাই) দুপুরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রবিন, রিফাত ও জিহাদ ঘনিষ্ট বন্ধু। নিহত রবিন মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি থানার খিলপাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে। সে তার মা, স্ত্রী ও ৮ মাসের কন্যা সন্তানকে নিয়ে ফতুল্লার নরসিংপুর মরাখাল পাড় এলাকার সাজেদার বাড়িতে ভাড়া থাকত। সে মিশুক গাড়ি চালাতো আর স্ত্রী আফসানা গার্মেন্টে চাকরী করে। অপরদিকে ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক চালক রিফাত ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার আশফরদি মিরাজ সরদারের ছেলে। সে পরিবারের সাথে ফতুল্লার শাসনগাও হুজুরের ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করে। অপর আসামী জিহাদ মুসলিম নগর এতিম খানার হুমায়ুন কবিরের পুত্র। সে অবন্তি কালার টেক্স নামের একটি গার্মেন্টস এ কাজ করে বলে জানা যায়।
নিহত রবিনের মা মনোয়ারা বেগম জানান, রবিন তাদের ভাড়াটিয়া বাড়ির মালিক সাজেদা বেগমের মিশুক চালাতো। মঙ্গলবার সন্ধায় রবিন মিশুক নিয়ে বের হয়। রাতে সে বাসায় ফিরে আসেনি। বুধবার দুপুরে লোক মাধ্যমে জানতে পারি রবিনকে কে বা কারা যেন হত্যা করে বক্তাবলীর চর রাজাপুরস্থ মাছের খামারে ফেলে রেখেছে। পরে সেখানে গিয়ে রবিনের পরিচয় শনাক্ত করি।
তিনি আরো জানান, রবিনের বাবা থেকেও না থাকার মত। রবিনকে গত দুই বছর আগে বিয়ে করাইছি। তার একটি ৮ মাসের কন্যা সন্তান রয়েছে। এখন শিশু বাচ্চাটা বড় হয়ে কাকে বাবা বলে ডাকবে। যারা নিস্পাপ শিশুকে এতিম করেছে তাদের বিচার চাই।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান জানান, বুধবার দুপুরে বক্তাবলীর চর রাজাপুর এলাকার মাছের খাবারে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে সংবাদ দিলে এসআই সোহাগ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। তিন ঘন্টার ব্যবধানে লাশের পরিচয় ও হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত রিফাত ও জিহাদকে আটকসহ ছিনিয়ে নেয়া মিশুক উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রবিন ও রিফাত ঘনিষ্ট বন্ধু। মূলত মিশুক ছিনিয়ে নিতেই রবিনকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আটককৃতরা স্বীকার করে।