রুদ্রবার্তা২৪.নেট: ফতুল্লার কাঠেরপুল এলাকায় পোশাক তৈরী কারখানা মোতালেব মনোয়ারা কম্পোজিট লিমিটেডের ৬তলা ভবন এক পাশে ডেবে গিয়ে ফাটলের সৃস্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১২ জুলাই) সকালে। পরে আতঙ্কিত হয়ে শ্রমিকরা ভয়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও ভবন নির্মান প্রকৌশলীরা গার্মেন্টে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের শান্ত করেন। পরে তল্লাশী করে কারখানার চার তলার ফ্লোরে দীর্ঘ ফাটল খুজে পেয়েছে। এতে ওই কারখানার ৬ তলা ভবনে সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারি প্রকৌশলী এবিএম খোরশেদ আলম।
সোমবার সকাল ৯টায় ফতুল্লার কাঠেরপুল এলাকায় অবস্থিত মোতালেব মনোয়ারা নীটওয়্যারস গার্মেন্টে এঘটনা ঘটে।
শ্রমিকরা জানান, নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে ৬ তলা ভবন নির্মান করা হয়েছে। এভবনেই আবার নির্মান কাজ চলছে। কাজ চলাকালীন সময় ভবনের নিচতলায় রোববার সন্ধ্যায় একটি দেয়াল ধসে পড়ে। আজ হঠাৎ পুরো ভবন শক্তিশালী ভুমিকম্পের মতো কেপে উঠে। মনে হয়েছিল ভবনটি হেলে পড়ছে। তখন শ্রমিকরা ভয়ে দ্রæত গার্মেন্ট থেকে নেমে বাহিরে অবস্থান করে কান্নাকাটি করতে থাকে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসে শ্রমিকদের শান্ত করেন। পরে ভবন নির্মান প্রকৌশলীরা আসলে শ্রমিকরা তাদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন এ ভবনে তারা কাজ করবেনা। যেকোন সময় ভবনটি ধসে পড়ে ব্যাপক হতাহত হতে পারে। শ্রমিকদের আপত্তিতে প্রকৌশলীরা কারখানার প্রতিটি ফ্লোর তল্লাশী করেন। এতে প্রকৌশলী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা চার তলার ফ্লোরে অনেক স্থানে মোটা টাইলস ফেটে হা করে থাকতে দেখেছে।
শ্রমিকদের দাবী এ ভবনটি ভেঙ্গে নতুন করে করা হউক। নয়তো আলোচিত রানা প্লাজার মত ভবন ধসে শত শত শ্রমিক হতাহত হতে পারে। কোন ঝড় বৃস্টি ছাড়াই যেভাবে ভবনটি কেপে উঠেছে তাতে মনে হয়েছে আর কারো বাড়ি ফেরা হবেনা। শ্রমিকরা সরকারের কাছে জোর অনুরোধ জানিয়েছে ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার।
ভবনের বিষয়ে জানতে কারখানার জিএম সাইফুল ইসলামকে ফোন করলে তিনি এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এমএ শাহীন জানান, মোতালেব-মনোয়ারা গার্মেন্টের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। ওই ভবনে প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করে। রোববার সন্ধ্যায়ও ভবনটি কেঁপে উঠে। তখনও শ্রমিকরা আতংকিত হয়ে মালিকপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছে গার্মেন্টের কাজ বন্ধ রাখার। কিন্তু মালিক পক্ষ শ্রমিকদের কোন কথা শুনেনি। ফের দ্বিতীয় দফায় ভবনটি আজ প্রচন্ড জোরে কেপে উঠে। শ্রমিকরা আমাকে জানিয়েছে ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত করা না হলে কেউ কাজে যোগ দিবেনা।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, কারখানা ছুটি ঘোষনা করলে শ্রমিকরা যার যার মতো বাড়ি ফিরি গিয়েছে। কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে কারখানাটি ঝুকিপূর্ন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারি প্রকৌশলী এবিএম খোরশেদ আলম বলেন, মোতালেব-মনোয়ারা নীটওয়্যারসে পাশাপাশি ৫ তলা এবং ৬ তলা দুটি বিল্ডিং অবস্থিত। তন্মধ্যে ৬ তলা বিশিষ্ট বিল্ডিং এর নিচতলায় সংস্কার কাজ চলছিল। ধারনা করা হচ্ছে নির্মান কাজ করার সময় নির্মান শ্রমিকরা হয়তো কোন দেয়ালে অথবা পিলারে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেছে। একে ভবনটি কেঁপে উঠেছে। এতে চার তলার ফ্লোরে কিছু অংশে ফাটল ধরেছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখবো কি পরিমান নির্মান সামগ্রী দিয়ে ভবন নির্মান করা হয়েছে এবং ভবন তৈরীর কোন অনুমোদন আছে কিনা। আপাতত ঝুঁকিপুর্ন হিসেবে সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ৬ তলা ভবনে গার্মেন্টের সকল প্রকার কাজকর্ম নিষেধ করা হয়েছে।