নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনার পঞ্চম দিনে মা-মেয়েসহ ৬জনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
রোববার (৯ জানুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার বক্তাবলী এলাকা থেকে ৪জন ও বিকালে আরও ২ জনের লাশ পানিতে ভাসতে দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলকে খবর দেয়। উদ্ধার হওয়া চারজনের মধ্যে তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করেছে পরিবার। তারা হলেন- জেসমিন আক্তার (৩২) ও তার মেয়ে তাসফিয়া (২) এবং কলেজ ছাত্র সাব্বির (১৮)। বাকি তিন জনের পরিচয় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের নারায়ণগঞ্জের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন বলেন, ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ ৬জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের উদ্ধারে চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ ৮জন হলেন-কিশোরগঞ্জের ইদ্রিস আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ (২২), রেকমত আলীর ছেলে মোতালেব (৪২), চর বক্তাবলী এলাকার রাজুর ছেলে সাব্বির (১৮), মধ্য চরের সোহেলের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৩৫), তাদের ছেলে তামীম খান (৮), মেয়ে তাফসিয়া (২), তাসমিম ওরফে তাসলিমা (১৫) ও আওলাদ (২৮)।
উল্লেখ গত ৫ জানুয়ারি সকালে মেসার্স ফারহান নেভিগেশনের এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের ধাক্কায় ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটলে ৮ জন নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই লঞ্চটি জব্দ করে নৌ-পুলিশ। আটক করা হয় লঞ্চের মাস্টার কামরুল হাসান (৪০), ইনচার্জ ড্রাইভার মো. জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া (৪০) ও সুকানি মো. জসিম মোল্লাকে (৩০)। পরদিন ট্রলারডুবির ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের নৌ-নিরাপত্তা বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) বাবু লাল বৈদ্য। মামলায় আসামি করা হয়েছে মেসার্স ফারহান নেভিগেশনের এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের মাস্টার, ইনচার্জ ও সুকানিকে।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়, ৫ জানুয়ারী বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে ঢাকাগামী এম.ভি ফারহান-৬ নামে লঞ্চ বেপরোয়া গতিতে এসে ৪০/৫০ জন যাত্রীসহ খেয়া পারাপারের একটি ট্রলারকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রলারটি ডুবে যায়। এসময় ৯জন ট্রলারের যাত্রী নিখোঁজ হয়। লঞ্চের মাস্টার কামরুল হাসান (৪০), ইনচার্জ ড্রাইভার জসিম উদ্দিন ভুইয়া (৪০) ও সুকানি মোঃ জসিম মোল্লার (৩০) দায়ীত্ব অবহেলার কারনেই এই দূঘর্টনা ঘটে বলে মামলায় উল্লেখ্য করা হয়েছে।