চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আগামীকাল বুধবার বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া, একই দিনে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ২০ থেকে ২২টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এই সফরকালে অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাতে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল অর্থনীতি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা, ষষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানি ও দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে সমঝোতা স্মারকগুলো সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সফরকালে দুই দেশের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনেরও ঘোষণা করা হবে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৬ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। সে সময় উভয় দেশ কৌশলগত অংশীদারিত্বে পৌঁছেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুলাই মাসে বেইজিং সফর করেছিলেন। এর আগেও তিনি বিভিন্ন সময়ে চীন সফর করেছেন। দুই দেশ আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে।
মঙ্গলবার এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানস্থলের সভাকক্ষে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী বেইজিংয়ের সাংগ্রি-লা সার্কেলে চীনের ওয়ার্ল্ড সামিট উইং-এ বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধাবিষয়ক বিশ্ব সম্মেলনে যোগ দেবেন। বিকেলে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে প্রধানমন্ত্রী ও কনসালটেটিভ পার্টির প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা। প্রধানমন্ত্রী পরে তিয়েনআনমেন স্কয়ারে পিপল’স হিরোদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সন্ধ্যায় বেইজিংয়ে বাংলাদেশ হাউসে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত নৈশভোজে তিনি যোগ দেবেন।
বুধবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রিমিয়ার লি কিয়াংয়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক গ্রেট হল অব দ্য পিপলে অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারকসহ (এমওইউ) বেশ কিছু নথি সই করা হবে। পরে তিনি একই স্থানে চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন। একই দিন বিকেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
চীন সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী বেইজিং ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটে বেইজিং সময় ১১ জুলাই বেলা ১১টায় দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন। ফ্লাইটটি একই দিন বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা।
সোমবার (৮ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী চার দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে চীনের রাজধানী বেইজিং পৌঁছান।