ইনজুরিতে পড়ার প্রবল ঝুঁকি নিয়েই ক্যারিয়ার শুরু করেন পেস বোলাররা। যার কারণে প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও তাদের অনেকেই নিজেদের সামর্থ্য ও দক্ষতার পুরো প্রয়োগ ঘটাতে পারেন না। পেসারদের চোটের কবলে ছিটকে পড়ার দরুন ভুগতে হয় তার দলকেও। সে কারণে গতিতারকাদের চোটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে নতুন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
পেস বোলারের স্বর্গরাজ্য বলা হয় পাকিস্তানকে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সেভাবে তাদের কোনো বড় তারকা বোলারকে দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকতে দেখা যায় না। কিংবা ওয়াসিম আকরাম, ইমরান খান কিংবা ওয়াকার ইউনিসদের লিগ্যাসিও কেউ অনুসরণ করছে কি না সেই প্রশ্ন রয়েছে। সবকিছু বিবেচনায় জাতীয় দলের পেসারদের বারবার চোটে পড়া ঠেকাতে একটি বিস্তৃত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পিসিবি। যেখানে তারা বোলারদের ফিটনেস, খাদ্যাভ্যাস ও কারিগরি দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
সূত্রের বরাতে পাক সংবাদমাধ্যম জিও সুপার জানিয়েছে, এই প্রকল্পের মূল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে লাহোরের ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমি (এনসিএ)। এখানে কোচ ও বিশেষজ্ঞরা ফাস্ট বোলারদের বল করার ভঙ্গি ও স্কিল ডেভেলপমেন্টের ওপর কাজ করবেন। পুরো প্রকল্পের লক্ষ্য হলো বোলারদের চোটের ঝুঁকি কমানো এবং দীর্ঘমেয়াদে উন্নত পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা রাখা। পিসিবির হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের পরিচালক আকিব জাভেদ এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দেবেন। এতে পেসারদের জন্য আলাদা ফিটনেস রুটিন, খাদ্য পরিকল্পনা ও লক্ষ্যভিত্তিক অনুশীলন (ফিল্ডিং, ব্যাটিং ও বোলিং) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে এক সূত্র বলেন, ‘ফাস্ট বোলারদের ফিট এবং কারিগরি দিক থেকে সক্ষম রাখাই আমাদের লক্ষ্য। যাতে তারা চোটের শিকার না হয় এবং ক্যারিয়ারে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে।’ একই প্রকল্পের অধীনে ইতোমধ্যে পিসিবির স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেশনে অংশ নিচ্ছেন আমির জামাল ও হুনাইন শাহ। এ ছাড়া আকিফ জাভেদের বোলিং অ্যাকশন শোধরানোর কাজও চলমান আছে, যা দেশের পেস বোলিং রিসোর্সকে শক্তিশালী করার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।
জুন মাস থেকে এনসিএ–তে ১৭ জন খেলোয়াড় নিয়ে স্কিল ডেভেলপমেন্ট ক্যাম্প শুরু হয়েছিল। যেখানে কোচদের তত্ত্বাবধানে খেলোয়াড়রা ক্যাম্পের প্রথম দিনই ফিল্ডিং ও ফিটনেস সেশনে অংশ নেন। মোহাম্মদ নাঈম ও আলি জারিয়াবের তরুণ বোলারদেরও এই ক্যাম্পে যোগদানের কথা রয়েছে। এর আগে শুরু হওয়া ক্যাম্পে প্রথম ধাপে সকালে কঠোর ফিটনেস ও ফিল্ডিং সেশন হয়। এরপর বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হয়েছে স্কিল-ভিত্তিক অনুশীলন, যার মধ্যে নেট প্র্যাকটিসও ছিল।
পরবর্তীতে দ্বিতীয় ধাপের শেষ দুইদিন ক্রিকেটাররা লাহোর সিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন মাঠে ম্যাচ-সিনারিও অনুশীলনে অংশ নেন। এই ক্যাম্পের জন্য শর্টলিস্ট করা হয়েছিল ৪৭ খেলোয়াড়কে। যাদের তিনটি দলে ভাগ করে ১৬ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত অনুশীলন করানো হয়। দ্বিতীয় ধাপ শেষে পিসিবি চূড়ান্ত ধাপের জন্য ১৭ জনের নাম ঘোষণা করে, যা ৩০ জুন শুরু হয়ে ৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে।