নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেছেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বিষয় থাকবে নিরাপত্তা, নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা। আপনাদের সকলের সহযোগিতায় একটি নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
পূজামণ্ডপগুলোতে থাকবে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। একটি সুন্দর আনন্দঘন পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব আয়োজনে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সার্বক্ষণিক সচেষ্ট থাকবে।
আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব সফল করতে নারায়ণগঞ্জ পূজা পরিষদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রবিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি পূজামণ্ডপগুলোতে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে মেটাল ডিটেক্টর রাখতে হবে। তাছাড়া সিসি ক্যামেরা লাগাতে পারলে অপ্রীতিকর ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে।
পূজামণ্ডপগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে যদি লিখে রাখা যায় “এই পূজামণ্ডপ সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত” তাহলে অনেকগুলো পুলিশের চেয়ে বেশি কাজে দেবে। তাছাড়া অতিরিক্ত বাদ্যযন্ত্র পরিহার করতে হবে।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পূজা পালন করতে হবে। দেশের চলমান করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে সকলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব সফলভাবে আয়োজন করতে পারবো বলে আশা করছি। সকলকে শারদীয় দূর্গোৎসবের আগাম শুভেচ্ছা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ গুলোর সমস্যা তুলে ধরে তা সমাধানের জন্য পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা বাস্তবায়নে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক চেষ্টায় দেশ থেকে সকল প্রকার সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী এবং জঙ্গী তৎপরতা দুর হয়েছে। তারপরও একটি প্রতিক্রিয়াশীল চক্র ধর্মীয় উস্কানি মূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে একটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরীর চেষ্টা করে থাকে। আমরা সবাই সজাগ থেকে আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবে যাতে সুন্দরভাবে সফলভাবে পালন করতে পারি সেই চেষ্টা করে যাবো।
তিনি বলেন, প্রতিবারের মত এবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে নারায়ণগঞ্জের প্রধান সড়ক বিবি রোডে কোন শোভাযাত্রা করা যাবে না। দিনের আলোতে বিসর্জন সম্পন্ন করতে হবে। কেউ যদি দিনের আলোতে বিসর্জন শেষ করতে না পারেন, তার দায়-দায়িত্ব নিজেতেই বহন করতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। ফেসবুকে কোনরকম গুজব ছড়িয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা যাবে না। পূজামণ্ডপে কোন সমস্যা হলে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলাপ করে তা সমাধান করতে হবে।
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা প্রতিবারের মতো এবারও সফলভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব আয়োজন করতে সক্ষম হবে বলে আশা রাখি। সকলকে শারদীয় দূর্গোৎসবের অগ্রিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) নাজমুল হাসান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ জামান, ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রকিবুজ্জামান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাস, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুণ কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাহা, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল, ফতুল্লা থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রঞ্জিত মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক শিবু দাস, সোনারগাঁওয়ের সভাপতি লোকনাথ দত্ত, বন্দরের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, সিদ্ধিরগঞ্জের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, রূপগঞ্জের সভাপতি গনেশ পাল, আড়াইহাজারের সভাপতি হারাধন চন্দ্র দে, পূজা পরিষদ নেতা সঞ্জয় দাস, অভিরাজ সেন সজল, কৃষ্ণ আচার্য, সুজন বিশ্বাসসহ পুলিশ প্রশাসন ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।