
সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে গেজেট আকারে জারি হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হয়। এর আগে এ বিষয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিস্তারিত তথ্য ও যুক্তি তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে তিনি সব কূল রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন।
বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ নির্বাচনমুখী প্রায় সব দলের অন্যতম দাবিগুলো মানার ক্ষেত্রে একধরনের কৌশলী ভারসাম্য রক্ষা করা হয়েছে। এ সুবাদে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকটের সমাপ্তি ঘটবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে জুলাই আদেশের গেজেট জারির আগে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বহুল কাঙ্ক্ষিত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের দিনেই অনুষ্ঠিত হবে গণভোট। এই গণভোটে সুনির্দিষ্ট ৪টি প্রশ্ন থাকবে। সাধারণ ভোটাররা যে কোনো একটিতে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ দিলেই হবে। এছাড়াও জাতীয় সংসদ হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে গঠিত হবে সংসদের উচ্চকক্ষ। আগামী নির্বাচিত সংসদ দুটি দায়িত্ব পালন করবে। প্রথমত-সংবিধান সংস্কার পরিষদ, এরপর নিয়মিত আইনসভা। সংসদ অধিবেশন শুরুর ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই সনদে উল্লিখিত প্রস্তাব অনুসারে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। গেজেটে এ সংক্রান্ত আদেশের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’।
এদিকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করে বলেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলো জন-আকাঙ্ক্ষার জুলাই আদেশ মেনে নেবে। তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব মূলত তিনটি-হত্যাকাণ্ডের বিচার করা, জবাবদিহিমূলক ও কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এই অনুসারে কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ এম শাহান বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, জুলাই আদেশে অন্তর্বর্তী সরকার সব পক্ষকে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করেছে। দলগুলোর দাবি মানার ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা ছিল। কাউকে খুব বেশি খুশিও করা হয়নি। আবার কাউকে অগ্রাহ্য করা হয়নি। অর্থাৎ, কোনো পক্ষের সব দাবি মেনে নিয়েছে-এমন নয়। যেমন: নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে। আবার উচ্চকক্ষে পিআর মেনে নেওয়া হয়েছে। নোট অব ডিসেন্টের ক্ষেত্রে সুবিবেচনার পরিচয় দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, এতে বিদ্যমান সংকট কেটে যাবে। রাজনৈতিক দলগুলো প্রাথমিকভাবে একটা প্রতিক্রিয়া দেখাবে। এটি স্বাভাবিক। কিন্তু এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, সেটি বিবেচনায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত তারা মেনে নেবে।’
গণভোট : সনদের চূড়ান্ত আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে গণভোটে একমত ৩০টি রাজনৈতিক দল। কিন্তু জামায়াতসহ ৮টি দল চায় জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট। আর বিএনপি চেয়েছে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে। এ নিয়ে দলগুলো মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে বলেন, সব বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোটের আয়োজন করা হবে। অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচনের মতো গণভোটও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংস্কারের লক্ষ্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হবে না। নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে। গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে উপযুক্ত সময়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে। তিনি বলেন, গণভোটের ব্যালটে প্রশ্নও নির্ধারণ করেছি।
প্রশ্নটি হবে এরকম-‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?’
ক. নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
খ. আগামী সংসদ হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।
গ. সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
ঘ. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।
এ বিষয়ে গণভোটের ব্যালটে পৃথক চারটি প্রশ্নের একটি উত্তর হিসাবে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে মতামত জানাতে হবে।
সংবিধান সংস্কার পরিষদ : গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ-সূচক’ হলে আগামী সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। এই প্রতিনিধিরা একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিষদ তার প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। এই সময়ের পরে সংসদ নিয়মিত আইনসভা হিসাবে কাজ করবে। তবে এই সময়ের মধ্যে সংবিধান সংশোধন না হলে কী হবে, তা পরিষ্কার করা হয়নি। ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশে বলা হয়েছিল অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিন অর্থাৎ ৯ মাসে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে তারা ব্যর্থ হলে জুলাই সনদের প্রস্তাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে প্রতিস্থাপিত হবে। তবে বিএনপির ব্যাপক আপত্তির কারণে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে প্রতিস্থাপিত হবে-এই বাধ্যবাধকতা বাদ দেওয়া হয়েছে।
পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ : সংবিধান সংস্কারের পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে (পিআর) উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। উচ্চকক্ষে আসনসংখ্যা হবে ১০০। এর মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা অনুসারে সংবিধানে এই সনদ অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ প্রথম অধিবেশন শুরুর ২১০ দিন বা সাত মাসের মধ্যে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে।
বিচার : ড. ইউনূস বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ এগিয়ে যাচ্ছে। এজন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের প্রথম রায় শিগ্গিরই দিতে যাচ্ছে। ট্রাইব্যুনালে আরও কয়েকটি মামলার বিচার চূড়ান্ত পর্যায়ে। সাধারণ ফৌজদারি আদালতে জুলাই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত কিছু বিচারকাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও দেশের ইতিহাসে প্রথমবার গুমের মতো নৃশংস অপরাধের বিচারকাজ শুরু করেছি।
জুলাই আদেশ জারি : সনদ বাস্তবায়নের চূড়ান্ত আইনি ভিত্তি গণভোট। কিন্তু প্রাথমিক আইনি ভিত্তি হিসাবে বিশেষ আদেশ জারি করেছে সরকার। ড. ইউনূস বলেন, রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষরিত জুলাই সনদকে মূল দলিল হিসাবে ধরে নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন করেছে। এটি বিরাট খবর। এই আদেশে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিধান গ্রহণ করেছি। আদেশের ১৫টি অনুচ্ছেদের মধ্যে ৮টি অবিলম্বে কার্যকর হবে। বাকি ৭টি অনুচ্ছেদ গণভোটে অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যকর হবে। রাষ্ট্রপতি এই আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। তবে এই আদেশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
জামায়াত ও এনসিপি চেয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রধান উপদেষ্টার এই আদেশে স্বাক্ষর করা উচিত। বিএনপি মনে করে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবী সরকার নয়। বর্তমান সংবিধানের অধীনে তারা শপথ নিয়েছেন। আর বর্তমান সংবিধানে আদেশ জারি করার ক্ষমতা কারও নেই। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন। এই আদেশ জারির ব্যাখ্যায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই সনদে সংবিধানবিষয়ক ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। কিছু প্রস্তাবে সামান্য ভিন্নমত আছে। বাকি অল্পকিছু প্রস্তাবে আপাতদৃষ্টে মনে হয় অনেক দূরত্ব আছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এসব প্রস্তাবের ক্ষেত্রেও মতভিন্নতা খুব গভীর নয়। কেউ সংস্কারটা সংবিধানে করতে চেয়েছেন, কেউ আইনের মাধ্যমে করতে চেয়েছেন। কিন্তু সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা, নীতি ও লক্ষ্য নিয়ে কারও মধ্যে মতভেদ নেই। এই বিবেচনায় আদেশ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। তিনি বলেন, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে ঐকমত্য কমিশন প্রায় নয় মাস কাজ করেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা করেছে। মতের পার্থক্য থাকলেও অনেক বিষয়েই ঐকমত্যে আসতে পেরেছেন। ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্যও আশাব্যঞ্জক।
অন্যান্য সংস্কার : প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কারের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অগ্রগতি রয়েছে। সরকার বিভিন্ন কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের কাজ শেষ করেছে। কিছু সংস্কারের কাজ এখনো চলমান। অধ্যাদেশের মাধ্যমে বা বিদ্যমান আইন সংশোধন করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, বিচার ব্যবস্থাপনা, আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো, ডিজিটালাইজেশন সম্প্রসারণ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে বিভিন্ন সংস্কার হয়েছে। ভবিষ্যতে সুশাসনের জন্য এসব সংস্কার বড় ভূমিকা রাখবে। নির্বাচিত সরকার সংসদে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এসব সংস্কার গ্রহণ করবে।
জাতীয় নির্বাচন : তিনি বলেন, আমাদের আরেকটি দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচন। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য আমরা সব প্রস্তুতি নিচ্ছি। অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
রাজনৈতিক ঐক্য জরুরি : প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রায় দেড় যুগ ধরে জনগণ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। তারা এখন তারা আগামী নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগে উন্মুখ হয়ে আছেন। তাই আগামী ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। না হলে জাতি এক মহাবিপদের সম্মুখীন হবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে দেশবাসী যে ঐক্য গড়ে তুলেছিল, জীবিতরা যেন অল্পস্বল্প ভিন্নমত ও লঘু বিবাদে জড়িয়ে তার মর্যাদা ক্ষুণ্ন না করি। ১৩৩ শিশু, শত শত তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষের মৃত্যু, হাজার হাজার মানুষের অঙ্গহানির আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতেই হবে। দেশের জনগণ সামান্য যা চায় তা হচ্ছে, সবাই যেন ভিন্নমতের প্রতি সহিষ্ণুতা দেখাই। দলীয় স্বার্থ অতিক্রম করে, সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা ও জাতীয় চাওয়াকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরি। তাই আশা করি, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলো এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবে।
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা : ড. ইউনূস বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনীতিকে গভীর গহ্বর থেকে উদ্ধার করা ছিল আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। গত ১৫ মাসে আমরা সেই চ্যালেঞ্জ উতরাতে সক্ষম হয়েছি। রপ্তানি, বৈদেশিক বিনিয়োগ, রিজার্ভসহ অর্থনীতির সব সূচকে দেশ ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। লুট হয়ে যাওয়া ব্যাংকিং খাত ইতোমধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই খাতকে আরও শক্তিশালী করতে নানামুখী পদক্ষেপ চলমান। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক বিনিয়োগ কমলেও প্রথম বছরে দেশে এফডিআই (সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ) ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে।