আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরগম ২৭টি ওয়ার্ড। মেয়র, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলরদের পদচারনায় মুখরিত ওয়ার্ডের অলিগলি। চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে সর্বত্র আলোচনা নির্বাচন নিয়ে। কার সাথে কার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, কে জিতবেন, কার অবস্থা কেমন, ভোটাররা কাকে পছন্দ করছেন। কেন করছেন, কার দ্বারা ওয়ার্ডের উন্নয়ন হবে, কাকে দিয়ে আগামী দিনে আধুনিক ও সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ এবং মাদকমুক্ত ওয়ার্ড চিন্তা গড়ে উঠবে। এমন নানা বিষয় নিয়ে ভোটাররা হিসেব-নিকেষ করছেন। এমনই একটি ওয়ার্ড ৩ নাম্বার। এই ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলরসহ ৬জন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। সকল প্রার্থীই যে যার মতো প্রচারনা করছেন। তবে এই ওয়ার্ডে চাঁদনী আক্তার জ্যোতি (ঝুড়ি প্রতীক) নিয়ে চলছে মুখরোচক আলোচনা। প্রতীক বরাদ্ধের ৮ দিন গত হলেও তাকে মাঠে দেখছেন না ভোটাররা। তার কোন প্রচার প্রচারণা ও পোষ্টারও নেই। ফলে ভোটারদের মাঝে দেখা দিয়েছে কৌতুহল।
কাউন্সিলর প্রার্থী জ্যোতির বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, তিনি একই ওয়ার্ডের দুই বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও বর্তমান প্রার্থী শাহজালাল বাদলের স্ত্রী। বাদল ভোট কেন্দ্রে পেশিশক্তি প্রয়োগ করতে পুলিং এজেন্ট নিয়োগ দেওয়ার জন্য তার স্ত্রীকে ড্যামী প্রার্থী করেছেন।
অনেকই মত প্রকাশ করেন, দুইবার কাউন্সিলর হয়ে বাদল ওয়ার্ডবাসীর প্রত্যাশা পুরণ করতে না পারায় ভোটার তার প্রতি ক্ষুব্ধ। তাই এবার নিজে ড্যামী হয়ে স্ত্রী জ্যোতিকে মাঠে নামালে সহজেই বিজয়ী হতেন। কারণ বাদলের চেয়ে তার স্ত্রীর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। অপরদিকে দুইবার পরাচিত হওয়া তোফায়েল হোসেন এবারও প্রার্থী হয়েছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন দিনরাত। প্রচারণার কমতি নেই। বিগত দুটি নির্বাচনে বর্তমান কাউন্সিলর বাদলের সঙ্গে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। দুইবারই তিনি পরাজিত হয়েছেন। তবে সামাজিকভাবে বদল ও তোফায়েলের অবস্থান এলাকাবাসীর কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। নানা অভিযোগ বাদলের বিরুদ্ধে। ভ’মিদস্যুতা, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসায়িদের শেল্টার সবই করছেন তিনি। ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ বাদল ও তার বাহিনীর উপর ক্ষুব্দ। তাছাড়া সাতখুন মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামী কুখ্যাত নুর হোসেনের ভাতিজা বাদল ২০১১ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার চাচার প্রভাবে এলাকায় যা ইচ্ছা তাই করেছে। মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস করেনি। বর্তমানেও নিজের ও চাচার সন্ত্রাসীদের সংঘঠিত করে মাঠে নেমেছে। আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে ভোটারদের মাঝে। ফলে পরিবর্তনের বাতাস বইতে শুরু করেছে এই ওয়ার্ডে। এরই মধ্যে এবার এই ওয়ার্ডে নতুন মুখ রেডিও প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন শিক্ষানুরাগী ও সাংবাদিক এ আর ফররুখ আহমাদ খসরু। ভোটারদের কাছে একজন ভদ্র, শিক্ষিত সৎ মানুষ হিসেবে তার ব্যাপক পরিচিতি। আগামী সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক ওয়ার্ড গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তিনি। সাড়াও পাচ্ছেন।