শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের আলোচনা শেষ হয়েছে। মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের নানা আশ্বাস দিলেও, অন্যতম প্রধান দাবি ভিসির পদত্যাগ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আলোচনায় উপস্থিত থাকা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
তিনি বলেন, এরইমধ্যে ২৩ জন অসুস্থ হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা আরও বেশি অবস্থান করলে অসুস্থতার সংখ্যাটা বাড়বে। আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করেছি। আমরা সাড়ে ১২টার দিকে প্রবেশ করি। একটার দিকে আলোচনা শুরু করি।
তিনি বলেন, ভিডিও কনফারেন্সে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি তাদের বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের আইনগত ও অ্যাকাডেমিক সমস্যা যাতে না হয়, সেজন্য তিনি সেটি দেখবেন। মন্ত্রী আন্দোলনরত ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছেন তারা যেন অনশন ভেঙে আন্দোলন থেকে সরে যান। তিনি আলোচনায় প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তিনি সবকিছু শুনেছেন।
নাদেল বলেন, রোববার শিক্ষার্থীরা যেন লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে প্রস্তাবনা পাঠান। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অনশন ভাঙার বিষয়ে ইতিবাচক কোনো কথা আসেনি। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, সবার সঙ্গে কথা বলে কাল আমাদের জানাবেন। ভিসিকে ছুটি দেওয়া বা অপসারণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা আলোচনা করতে আগ্রহী, তবে অনশন ভাঙবেন না। তাদের এক দাবি, উপাচার্যের পদত্যাগ।
সবকিছু ঠিক থাকলে কাল দুপুরে এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বিফ্র করবেন। মোট ২৩জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৬ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আরও তিনজনসহ এখন ১০ জন ভিসির বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাত সাড়ে বারোটার দিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল শিক্ষামন্ত্রীর মাধ্যম হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন। রাত একটার দিকে শাবিপ্রবির ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনের ১২৯ নম্বর কক্ষে আলোচনা মন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনা শুরু হয়।
আলোচনায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক বিধান কুমার সাহা, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেন- শাহরিয়ার আবেদিন, অপূর্ব, মীর রানা, সাব্বির, নাফিসা আনজুম ইমু, রোমিও, উমর ফারুক, ইয়াসির সরকার, সাদিয়া আফরিন ও মোহাইমিনুল বাশার রাজ। আলোচনার সময় বাইরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা- এক দুই তিন চার ফরিদ তুই গদি ছাড়, সাস্টিয়ান সাস্টিয়ান এক হও এক হও, পতন পতন পতন চাই ফরিদের পতন চাই, এক দফা এক দাবি ফরিদ তুই কবে যাবি- বলে স্লোগান দেন।
উপাচার্যের পদত্যাগসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।