হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় তার কথিত স্ত্রীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় নবম দফায় আরও দুই জন সাক্ষী দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল নবম দফায় তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
সাক্ষ্য প্রদানকারিরা হলেন-পুলিশের এস আই এজাজুল হক ও মামলার বাদি জান্নাত আরা ঝর্ণার বাড়িওয়ালা মোশারফ হোসেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটির এ্যাডভোকেট রকিব উদ্দিন জানান, এই মামলায় এখন পর্যন্ত বাদি এবং বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ বিশজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আদালত আগামী ৬ জুন মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য্য করেছেন।
তিনি বলেন, প্রত্যেক সাক্ষী আদালতে বলেছেন, মামুনুল হক বাদি জান্নাত আরা ঝর্ণাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন। বাদি নিজেই তা স্বীকার করে অভিযোগ দিয়েছেন।
তবে আসামি মামুনুল হকের আইনজীবী এ্যাডভোকেট নয়ন বলেন, যে দুজন সাক্ষী দিয়েছে তাদের জবানবন্দিতে কারো কথার সাথে ঘটনার মিল নেই। ন্যায়বিচার পেলে মামুনুল হক খালাস পাবে বলে তিনি দাবি করেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, সকাল ৯টার দিকে মামুনুল হককে কঠোর নিরাপত্তায় কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। সেই সাথে আদালতপাড়া জুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।
এসময় আদালত প্রাঙ্গণে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা এসে জড়ো হতে থাকেন। পরে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে পুনরায় মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এ সময় পুলিশ তাকে নজরদারিতে রাখে। এরপর গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মামুনুলকে।
পরে এই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।
এরপর ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একই সঙ্গে ওই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।