রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

দেশের কল্যাণ ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য হজ যাত্রীদের কাছে প্রার্থনার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

  • আপডেট সময় শনিবার, ৪ জুন, ২০২২, ৩.০৬ এএম
  • ১৮৯ বার পড়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণ ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য হজ যাত্রীদের কাছে প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাহলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার হজ যাত্রীদের হয়রানি কমাতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর করে এর প্রভূত উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করে হজ যাত্রীদের কাছে দেশের সার্বিক মঙ্গল কামনায় দোয়া চেয়েছেন। কারণ, অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা তা যেন অব্যাহত থাকতে পারে।
হজ কার্যক্রম ২০২২-এর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাঁরা হজ পালন করতে যাচ্ছেন তারা যেন সুষ্ঠুভাবে হজ পালন এবং ইবাদত বন্দেগি করতে পারেন তা নিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্য।’
ইসলামকে ‘শান্তির ধর্ম’ এবং ‘সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ’আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী এর সম্মান রক্ষা এবং হজ পালনকালে সৌদি আইন মেনে চলার মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকার জন্যও সম্মানিত হজ যাত্রীদের প্রতি আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে রাজধানীর আশকোনা হজক্যাম্পের সঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
তিনি বলেন, ‘রোড টু মক্কা ইনিশিয়েটিভ’র মাধ্যমে আমরা আমাদের হজ ব্যবস্থাপনাকে আরো প্রযুক্তি নির্ভর করতে সক্ষম হয়েছি। ইমিগ্রেশন ঢাকাতেই হয়ে যায়, সেখানে কোন হয়রানি হয় না। মালপত্রও যাতে যথাযথ স্থানে পৌঁছে যায় সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ডেডিকেটেড বিমান সার্ভিস দেয়া হচ্ছে।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো.ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান এবং হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি মো. শাহাদত হোসেন তসলিমও বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য জাতির পিতার বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরার পাশাপাশি ইসলামের মূল মন্ত্র যে ‘শান্তি ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা’, সে সম্পর্কে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে তাঁর দেয়া ঐতিহাসিক বেতার ভাষণের কিঞ্চিত অংশ উদ্ধৃত করেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমরা ইনসাফের ইসলামে বিশ্বাসী। আমাদের ইসলাম হযরত নবী করীম (সা:) এর ইসলাম। যে ইসলাম জগতবাসীকে শিক্ষা দিয়েছে ন্যায় ও সুবিচারের অমোঘ মন্ত্র।’
সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন-২০২১’ প্রণয়ন করেছে। যাতে করে হজ যাত্রীরা কোন রকম হয়রানি ছাড়া হজে গিয়ে হজ পালন করতে পারেন।
তিনি বলেন, আজকের উন্নত হজ ব্যবস্থাপনার অনেক কিছু তাঁর নিজস্ব চিন্তা-চেতনার ফসল। অতীতে বিভিন্ন সময় ওমরাহ এবং হজ পালন করতে গিয়ে তিনি মিনা’তে হাজীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নিজ চোখে হাজীদের যে সব সমস্যা দেখেছেন সে সবই পরবর্তীতে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকেই আমাদের প্রচেষ্টা ছিল হজ ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করা। যা ধাপে ধাপে আমরা করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি এ জন্য সৌদি বাদশাহ এবং ‘দুটি বড় মসজিদের খাদেম’ যখনই যিনি ছিলেন এবং যুবরাজদের আমাদের হজ ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করায় ধন্যবাদ ও কতৃজ্ঞতা জানান।
অতীতের থেকে বর্তমানের হজ ব্যবস্থাপনা আমূল পরিবর্তিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পরিবর্তন আমার নিজের দেখা এবং সে জন্য আমি সত্যই খুব আনন্দিত।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশে আজকে ‘ই-হজ ব্যবস্থা’ প্রবর্তণ করেছে, যার ফলে অতীতের মত আর হাজীদের কষ্ট হয় না। সেই কষ্ট আমরা দূর করতে পেরেছি। এ জন্য তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, হাব, বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত এবং সৌদি আরবে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূতসহ সংশ্লিষ্ট সকলে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করায় ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী হজ যাত্রীদের কাছে দেশ ও দেশের জনগণ এবং ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট নিহত জাতির পিতা, বঙ্গমাতা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য দোয়া প্রত্যাশা করে বলেন, করোনা ভাইরাসের মত এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে যেন বাংলাদেশ এবং বিশ^ তথা সমগ্র মানব জাতি রক্ষা পায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও যেন বাংলাদেশ এবং বিশ^ রক্ষা পায় এবং বাংলাদেশ যে ভাবে অর্থনৈতিক উন্নতি করছে সেই উন্নয়নের পথে যেন আমরা আরো এগিয়ে যেতে পারি সে জন্যও হজ যাত্রীদের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যাতে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ যেন অন্ন, বন্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এং চিকিৎসার সুযোগ পেতে পারে এবং উন্নত সুন্দর জীবন পেতে পারে।
সকল হজ যাত্রীর আকাঙ্খা যেন আল্লাহ তা’য়ালা পূরণ করেন এবং তাদের জন্য হজ যেন সহজ হয় এবং আল্লাহর দরবারে যাতে কবুল হয় সে দোয়াও করেন তিনি।
তিনি বলেন, যাঁরা হজে যাবেন তাঁরা সৌদি আরবের সমস্ত নিয়ম কানুন এবং আইন মেনে চলবেন। কারণ, ইবাদত বন্দেগি করার পাশাপাশি দেশের মান সম্মান রক্ষা করাও সকলের কর্তব্য। পাশাপাশি নিজেরা নিজেদের সুস্থ রাখার চেষ্টা করবেন যাতে সুস্থ থেকে মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে দোয়া করতে পারেন।
পরে তিনি হজ যাত্রীদের সঙ্গে মত বিনিময়ও করেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ ৯ জিলহজ ১৪৪৩ হিজরি তারিখে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। বৈশ্বিক করোনা মহামারি পরিস্থিতির কারণে ২০২০ ও ২০২১ এই দুই বছর বর্হিবিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশ থেকে কেউ হজে যেতে পারেন নি। করোনা পরিস্থিতি একটু ভালো হওয়ায় এ বছর সারা বিশ্বের ১০ লাখ হাজী নিয়ে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে এ বছর ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী হজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort