হাক্কানি নেটওয়ার্ককে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছে তালেবান। তালেবানের প্রধান হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদার তিন উপ-প্রধানের অন্যতম সিরাজউদ্দিন হাক্কানী এই নেটওয়ার্কের লোক।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে এই হাক্কানী নেটওয়ার্ক কারা?
বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে সবচেয়ে দুর্ধর্ষ জিহাদি আন্দোলন হাক্কানি নেটওয়ার্ক। তারা কোনো একক, বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী নয়; তারা তালেবানেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ।
হাক্কানি গোষ্ঠী তালেবানের হয়ে আফগানিস্তানে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে অর্থ সংগ্রহের কাজ করে।
২০১১ সালে বিবিসিকে পাঠানো এক অডিও সাক্ষাৎকারে এই নেটওয়ার্ক ঠিক কীভাবে কাজ করে, সেটা ব্যাখ্যা করে সিরাজ হাক্কানি বলেন, আমীর-উল মোমিনিন মোল্লা ওমরই আমাদের নেতা– তার নির্দেশই আমরা মেনে চলি। তার কথায়, ‘তবে ইসলামি আমিরাতের ভেতর নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে আমাদের ওপর দায়িত্ব ন্যস্ত আছে, সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাই প্রতিটি সামরিক অভিযানে ইসলামী আমিরাতই আমাদের নির্দেশ দেয়, পরিচালনা করে, আর্থিক মদতও জোগায় আমরা সেটা হুবহু মেনে চলি। ’
অর্থাৎ তালেবানের প্রধান নেতাকে হাক্কানি নেটওয়ার্কও প্রধান নেতা হিসেবে গণ্য করে।
কাবুলে ২০১১ সাল পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বিধ্বংসী বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলার জন্য দায়ী করা হয়ে থাকে হাক্কানি নেটওয়ার্ককে।
জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র ২০১১ সালে হাক্কানি নেটওয়ার্কের অন্যতম নেতা খলিল হাক্কানিকে মোস্ট ওয়ান্টেড ঘোষণা করে। তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৪৩ কোটি পুরস্কারেরও ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দারা হাক্কানি নেটওয়ার্কের এই নেতার খোঁজে আকাশ-পাতাল এক করে ফেলেছিলেন।
অবশ্য গত রোববার তালেবান কাবুল দখল করার পর তিনি প্রকাশ্যে এসেছেন। সম্প্রতি কাবুলের এক মসজিদে তাকে দেখা গেছে।
ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে, আল-কায়েদাসহ অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে এই হাক্কানি নেটওয়ার্কের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
পশ্চিমা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, হাক্কানি নেটওয়ার্কের হাতে কাবুলের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক এবং এটি তালেবানের দেওয়া প্রতিশ্রুতির পরিপন্থি।