বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপি’র আহবায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের আপামর জনতার দাবির প্রেক্ষিতে কর্তব্য ও দায়িত্ববোধ থেকে তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা নির্বাচন অফিস থেকে তিনি নিজের মনোনয়নপত্র নিজেই সংগ্রহ করে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।
তিনি বলেন, গত ৫০ বছর ধরে আমি নারায়ণগঞ্জবাসীর পাশে ছিলাম। তাদের জন্য কাজ করেছি। বস্তির লোকজন থেকে শুরু করে ঠেলাগাড়িওয়ালা দিনমজুরের জন্য কাজ করেছি। তাই তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি মেয়র পদে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ২০০৩, ২০১১ ও ২০১৬ সালে দল থেকে আমাকে নির্বাচন করার জন্য মনোনিত করা হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে আমার নির্বাচন করা হয়নি। এবার সব মহল থেকে দাবি এসেছে আমি যাতে নির্বাচন করি। জনতার সে দাবির প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আমি নির্বাচনে নেমেছি।
তৈমুর বলেন, একসময় যারা নারায়ণগঞ্জের মানুষকে আগলে রাখতেন তাদের অনেকে আজ বেঁচে নেই। আমি তৈমুর আলম খন্দকার বেঁচে আছি। আমি মনে করি, নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য আমার কিছু করা দরকার।
শামীম ওসমান ও আইভীর প্রতি ইঙ্গিত করে তৈমুর বলেন, নারায়ণগঞ্জে মেয়র আর এমপি মুখোমুখি। তাদের বিরোধের কারণে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটা চলতে পারে না। তাই আজ আমি চুপ থাকলে আমার বিবেকের কাছে দায়ী থাকবো না হয় আমার পাপ হবে।
তৈমুর আলম বলেন, আমি বিআরটিসির চেয়ারম্যান থাকাকালীন কোন ভাড়া বৃদ্ধি করতে দেইনি, ঢাকা ভার্সিটিতে থাকাকালীন কোন বেতন বৃদ্ধি করতে দেইনি। অনুরূপভাবে নাসিক আজ ট্যাক্স বৃদ্ধি করে নগরবাসীকে বিপদে ফেলেছে, আমি আসলে কোন ট্যাক্স বৃদ্ধি হবে না। জীবনের বিনিময়ে হলেও নগরবাসীর চাহিদা পূরণ করবো। নারায়ণগঞ্জে ৪ জন এমপি আছেন ও ১ জন মন্ত্রী আছেন, নির্বাচনকে ঘিরে আচরণবিধি ভাঙ্গবেন না, যদি অতিরিক্ত কোন ভূমিকা নেন মন্ত্রী মহোদয় তাহলে আইনের হ্যান্ডকাপ আপনার হাতে লেগে যাবে।
তৈমুর আলম খন্দকার জানান, জাতির এই অসময়ে আমি কর্তব্য ও দায়িত্ববোধ থেকে নির্বাচনে এসেছি। একেএম সামসুজ্জোহা, জালাল উদ্দিন, আলী আহমেদ চুনকা, একে এম নাসিম ওসমান, নাজিম উদ্দিন, কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম তারা আজ নেই। আমি তৈমুর আলম খন্দকার বেচেঁ আছি। আর তাই আমি মনে করি এই নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য আজ আমাকে প্রয়োজন। জাতীয় রাজনীতি ও নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি ভিন্ন। এই শহরের মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দরকার, নাগরিক সুবিধা দেয়া নাসিকের দায়িত্ব।
তিনি আরো বলেন, ইভিএম চুরির বাক্স, ইভিএমে চুরি করবেন না। জনগন যে রায় দেয় মেনে নেব। ওবায়দুল কাদেরের (সড়ক ও সেতুমন্ত্রী) সঙ্গে জেল খেটেছি, গুলি জেলের ভয় পাই না। যদি কারচুপি হয় তাহলে নারায়ণগঞ্জ হবে মাগুরা, হুশিয়ারি দিলাম। পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এ নিয়ে মেয়র পদে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আগামি ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ।